বাসকপ নিউজ : রাত পোহালেই কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে নিজেদের ফাইনাল পরীক্ষা অংশ নিতে যাচ্ছে। শঙ্কা ও চ্যালেঞ্জের এই পরীক্ষায় পূর্ণ মার্ক পেতে সর্বোচ্চ পর্যায়ের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে সাংবিধানিক এ সংস্থাটি। রোববার (৭ জানুয়ারি) সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত টানা চলবে আউয়াল কমিশনের ফাইনাল পরীক্ষা। নির্বাচন কমিশন সংসদ ভোটের সার্বিক প্রস্তুতি নিলেও ব্যালট পেপার পাঠানো ও ভোটার উপস্থিতি নিয়ে চ্যালেঞ্জে রয়েছে। তবে কাজী হাবিবুল আউয়ালের দাবি অতীতের ন্যায় এবারও ভোটার উপস্থিতি ভালো হবে।
এবারের নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি প্রার্থী রয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের। হাইকোর্ট থেকে তিনজন প্রার্থিতা ফিরে পাওয়ায় দলটির প্রার্থী ২৬৬ জন। এ ছাড়া জাতীয় পার্টির ২৬৫ জন, তৃণমূল বিএনপির ১৩৫, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির ১২২, বাংলাদেশ কংগ্রেসের ৯৬, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের ৫৬ জনসহ নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত ২৭টি রাজনৈতিক দলের প্রার্থী সংখ্যা ১ হাজার ৫৩৪। স্বতন্ত্র প্রার্থী ৪৩৬ জন। সব মিলিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১ হাজার ৯৭০ জন। এর মধ্যে ৯০ জন নারী ও ৭৯ জন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এ ছাড়া নির্বাচনে ইসলামী ফ্রন্ট বাংলাদেশ, ইসলামী ঐক্যজোট, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, গণফোরাম, গণফ্রন্ট, জাকের পার্টি, জাতীয় পার্টি, জাতীয় পার্টি-জেপি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ, তৃণমূল বিএনপি, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি, বিকল্পধারা বাংলাদেশ, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, বাংলাদেশ কংগ্রেস, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন, বাংলাদেশ তরীকত ফেডারেশন, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ), বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট-বিএনএফ, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি ও বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (এমএল) প্রার্থী দিয়েছে।
নিবন্ধিত ৪৪টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে দেশের অন্যতম বড় দল বিএনপিসহ ১৬টি দল এ নির্বাচন বয়কট করেছে। নিরপেক্ষ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনসহ একাধিক দাবিতে নির্বাচন থেকে দূরে রয়েছে দলগুলো।
সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে ৭২ ঘণ্টা মোটরসাইকেল চলাচলের বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এ সময় শুধু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সশস্ত্র বাহিনী, প্রশাসনের সদস্য ও অনুমোদিত পর্যবেক্ষক, জরুরি সেবার যানবাহন, ওষুধ, চিকিৎসা সরঞ্জাম ও অভিন্ন কাজে ব্যবহৃত জিনিসপত্র এবং সংবাদপত্র বহনকারী সব ধরনের যানবাহন, দূরপাল্লার যানবাহন, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও তাদের এজেন্টদের ক্ষেত্রে এ বিধিনিষেধ শিথিল করা হবে। সাংবাদিক, পর্যবেক্ষক, নির্বাচন-সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারী, জাতীয় মহাসড়ক, প্রধান আন্তঃজেলা রুট, মহাসড়ক এবং প্রধান মহাসড়কের সংযোগ সড়কের ক্ষেত্রেও বিধিনিষেধ শিথিল করা হবে।
এবারের নির্বাচনে ৪২ হাজার ২৫টি কেন্দ্র রয়েছে। এর মধ্যে অপেক্ষাকৃত দুর্গম ২ হাজার ৯৬৪ কেন্দ্রে ভোট গ্রহণের আগের দিন শনিবার ব্যালট পেপার পাঠানো হবে বলে জানিয়েছে ইসি। এ ছাড়া ভোটের দিন সকালে ৩৯ হাজার ৬১ কেন্দ্রে ব্যালট পেপার যাবে। ভোট গ্রহণের দিন সংশ্লিষ্ট সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা, রিটার্নিং কর্মকর্তা বা সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছ থেকে ব্যালট পেপার সংগ্রহ করে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার সঙ্গে ভোর ৬টার মধ্যে সংশ্লিষ্ট প্রিসাইডিং কর্মকর্তার কাছে হস্তান্তর করবেন। ভোট গ্রহণের দিন সকালে ব্যালট পেপার পরিবহনের বিষয়ে মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে নিয়োজিত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা পরিকল্পনা গ্রহণ করবে।
এবারের নির্বাচনে ভোটার ১১ কোটি ৯৬ লাখ ৯১ হাজার ৬৩৩ জন। এর মধ্যে ৬ কোটি ৭ লাখ ৭১ হাজার ৫৭৯ পুরুষ, ৫ কোটি ৮৯ লাখ ১৯ হাজার ২০২ নারী এবং ৮৫২ জন হিজড়া।
Leave a Reply